1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন সোমবার: থমথমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি:

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২
  • ৩৬৪ বার পঠিত
  1. অনলাইন ডেস্ক: বোলিংয়ে দাপিয়ে বেড়ানো ক্রিকেটার ইমরান খান রাজনৈতিক জীবনে ছক্কা মেরেছেন একাধিকবার। দল গঠন করার ২২ বছরের মাথায় আসেন ক্ষমতায়। হন পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী। আবার ক্ষমতা হারিয়েছেন ২০২২-এ। প্রথম তিনটি পরিসংখ্যান বলছে ২২ যেন ইমরানের জন্য জাদুকরী সংখ্যা। কিন্তু এবার আর তা থাকল না। ৩ বছর ৭ মাস ২৩ দিন ক্ষমতায় থেকে দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে বিদায় নিলেন বিরানব্বইয়ের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। ক্ষমতা হারানোর পর ইমরান খান কোথায় আছেন সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ বলছেন, তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় তোলা হতে পারে- সেই আশঙ্কায় তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। সেখান থেকেই ইমরান তার ক্ষমতাচ্যুতি নিয়ে প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেছেন, শাসন পরিবর্তনে বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আজ পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছে। ইমরান খান বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়। কিন্তু শাসন পরিবর্তনে বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আবার পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছে। তবে দেশটির ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধপরায়ণ হবেন না। তবে সবকিছু মিলিয়ে পাকিস্তান রাজনীতিতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ইমরান খানের পতনের পর পাকিস্তানে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের প্রস্তুতি নিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। আগামীকাল সোমবার পাকিস্তানের স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ রবিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। বিকাল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। তিনি পাকিস্তান পার্লামেন্টের বিরোধী জোটের নেতা ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-পিএমএল (এন) সভাপতি। বিরোধী দলের আসনে থাকা দলগুলোর জোট ইতোমধ্যে শাহবাজকে তাদের প্রার্থী মনোনীত করেছে। শাহবাজের তোলা অনাস্থা প্রস্তাবেই ইমরান খানের পিটিআই সরকারের পতন ঘটলো। শাহবাজ শরিফ রাজনীতিতে তিন দশকের বেশি সময় তার ভাইয়ের প্রভাবে ছিলেন। ১৯৫১ সালে জন্ম নেওয়া শাহবাজ রাজনীতিতে যোগ দেন আশির দশকে, যখন নওয়াজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। শাহবাজ তিন দফায় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার কাজ তাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
শাহবাজ শরিফসহ সদ্য ক্ষমতাচ্যুত তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতৃত্বাধীন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি প্রধানমন্ত্রী পদে পুনর্নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়ন দাখিল করেছেন।  পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারপ্রধান তার মেয়াদের পুরো সময় ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। লিয়াকত আলী খান থেকে শুরু করে ইমরান খান কেউ মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। বিশ্বের আর কোনো দেশের এই রেকর্ড নেই। তবে ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খানই পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাকে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিতে হলো। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে এর আগে দুইবার ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হয়েছিল। ১৯৮৯ সালে বেনজির ভুট্টো এবং ২০০৬ সালে শওকত আজিজকে সেই পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়েছিল এবং তারা দুজনই তাতে উতরে গিয়েছিলেন।
ইমরান ব্যাপক দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই আর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে। কিন্তু বাস্তবতা হলো অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই ধীরে ধীরে বিপাকে পড়তে শুরু করে তার সরকার। এক পর্যায়ে গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান নিয়োগ নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়ান তিনি। আবার রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা শুরু করে, তখন তার মস্কো সফরও পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ভালো ভাবে নেয়নি। এর মধ্যেই ক্ষমতাসীন জোটের বড় অংশ এমকিউএম তাকে ছেড়ে বিরোধী জোটে যোগ দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারায় তার সরকার। এ ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকেই ইমরান খান বিরোধী দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিলেন, তারা বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই ষড়যন্ত্রের পেছনে আছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ তিনি রাশিয়া এবং চীনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এজন্যই তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত ইমরান খান : গতকাল শনিবার দিনভর নাটকের পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মধ্যরাতের অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান। তাকে বিদায় করতে পার্লামেন্টের ৩৪২ আইনপ্রণেতার মধ্যে অন্তত ১৭২ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল বিরোধীদের। সেখানে ১৭৪ ভোট পেয়ে তাদের অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে ক্ষমতায় আসার সাড়ে তিন বছরের মাথায় ইমরানের বিদায় নিশ্চিত হয়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবার সকালে অধিবেশন বসার পর নানাভাবে আস্থা ভোট এড়ানোর চেষ্টা করে গেছে ক্ষমতাসীন দল। শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কাইসার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার আনুগত্য বজায় রেখে পদত্যাগ করেন। ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের এমপিরা অধিবেশন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন; ইমরান নিজেও পার্লামেন্টে ছিলেন না। এরপর ভারপ্রাপ্ত স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়, যার ফলাফল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। পাকিস্তানের আইনসভা এখন নতুন একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেবে। ভোটাভুটি শেষে বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেন, পাকিস্তানে আজ নতুন ভোরের সূচনা হলো, আমরা পাকিস্তানকে নতুন করে গড়ে তুলব। এই আস্থা ভোট ঠেকাতে নানা নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিলেন ইমরান। গত ৩ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার। ইমরানের আহ্বানে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচন ডেকেছিলেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই দুই সিদ্ধান্ত অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে শনিবার অধিবেশন পুনরুজ্জীবিত করে ভোটাভুটির নির্দেশ দিলে লজ্জানক প্রস্থান এড়ানোর পথ বন্ধ হয়ে যায় ইমরান খানের জন্য।  সরকার গঠনের আগে দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতিই ঠিকভাবে পূরণ করে উঠতে পারেননি ইমরান। মূল্যস্ফীতির উচ্চ হার আর বিদেশি ঋণের বিপুল বোঝার কারণে দ্রুত জনসমর্থন হারাতে থাকে তার দল।
আদালতের নির্দেশে শনিবার সকালে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসার পর দফায় দফায় তা মুলতবি করা হয়। স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট শুরু না করায় বিরোধীদের ক্ষোভের প্রকাশ ঘটে পার্লামেন্টে। টান টান উত্তেজনা চলে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে। এদিকে পার্লামেন্টের বাইরে নানা জল্পনা কল্পনা শুরু হয়, সেনাপ্রধানকে অপসারণের গুঞ্জন ওঠে। সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া রাতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন। ইমরান রাত ৯টায় মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক ডাকলে পরিস্থিতি আরো জটিলতার দিকে গড়ানোর ইঙ্গিত আসতে থাকে। সম্ভাব্য সামরিক শাসন ঠেকাতে গভীর রাতে আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, শনিবার মধ্যরাতের আগেই আস্থা ভোটের নিষ্পত্তি করতে হবে। শেষ পর্যন্ত আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হওয়ার আগে আগে পদত্যাগ করেন স্পিকার আসাদ কাইসার। এরপর প্যানেল স্পিকার হিসেবে পিএমএল-এনের আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অধিবেশন শুরু হয়। রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে শুরু হয় ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি। স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে তিনি ফলাফল ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী ভবনে শনিবার রাতে যা ঘটেছে : বহু নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে যখন পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নানা ঘটনা ঘটছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী ভবনেও ঘটেছে অনেক নাটকীয় ঘটনা। সবার নজর পার্লামেন্টের দিকে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী ভবনে তখন অনেক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়; তার কিছু ক্যামেরার সামনে ঘটেছে, কিছু ঘটেছে রুদ্ধদ্বার কক্ষে। যখন ইফতারের কারণে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের অধিবেশন মুলতবি করা হয়, তখন হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রী ভবন সরগরম হয়ে ওঠে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেখানে তার আইন এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টাও অংশ নেন। সেই সঙ্গে পার্লামেন্টের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং কয়েকজন আমলাকেও ডেকে পাঠানো হয়। মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ইমরান খানের অভিযোগ অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকারকে উৎখাত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের যড়যন্ত্রের বিষয়টি কিছু কর্মকর্তার কাছে প্রকাশ করা হবে। সেই সময় পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার প্রধানমন্ত্রী ভবনে এসে পৌঁছান, তবে তাদের লাউঞ্জে অপেক্ষা করতে বলা হয়। এ সময় হেলিকপ্টারে করে দুইজন অনাহুত অতিথি এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী ভবনে। ভবন ঘিরে অস্বাভাবিক নিরাপত্তা প্রস্তুতি আর সশস্ত্র ব্যক্তি সজ্জিত হয়ে আসা ওই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে পৌনে এক ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন। এই দুইজন অতিথির উপস্থিতি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। তিনি অবশ্য হেলিকপ্টারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, কিন্তু যারা আসবেন বলে তিনি প্রত্যাশা বা ধারণা করেছিলেন, ঘটেছিল একেবারেই তার উল্টো।
বিবিসি উর্দু সার্ভিসকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইমরান খান আশা করছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশে পার্লামেন্ট বসার পর সেখানে যে হইচই শুরু হয়েছে, এরপর তিনি সেনাবাহিনীতে সদ্য যেসব রদবদল করেছেন, সেই সামরিক কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারে করে তার সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। সেটি হয়তো হতো, কিন্তু সমস্যা হলো, সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে যে বৈপ্লবিক রদবদল তিনি করতে চেয়েছিলেন, সেটা কার্যকর করতে হলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয়। কর্মকর্তাদের বরখাস্ত বা নতুন কর্মকর্তা নিয়োগের সেই আইনি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। ফলে ইমরান খানের বরখাস্ত আদেশ বা নতুন নিয়োগের আদেশ কার্যকরও হয়নি। যদিও আইএসপিআর একটি বিবৃতিতে বলেছে, বিবিসি যে প্রতিবেদন করেছে, তার সঙ্গে বাস্তব ঘটনার মিল নেই। সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, সদ্য পদ হারানো প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শনিবার রাতে যাতে এরকম কোনো রদবদল করতে না পারেন, সেজন্য রাতেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। যদি ইমরান খানের রদবদলের আদেশের প্রক্রিয়া সম্পন্নও করা হতো, তারপরেও সেটা যাতে বাতিল হয়ে যায়, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। শনিবার মধ্যরাতে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট খোলা হয় এবং সেখানকার প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে পাঠানো হয়। তখন জানানো হয়েছিল, হাইকোর্ট একটি জরুরি পিটিশনের শুনানি করবে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ইমরান খান রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন এবং সেনাপ্রধানকে পদচ্যুত করার সুপারিশ করেছেন। ফলে জনস্বার্থে আদালতের ওই আদেশ বাতিল করে দেওয়া উচিত। তবে শেষপর্যন্ত যেহেতু ইমরান খানের ওই আদেশ কার্যকর হয়নি, ফলে ওই পিটিশনেরও আর শুনানি হয়নি। তবে এর কিছু পরে, মধ্যরাতে পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার। ভোটাভুটি শুরুর কিছুক্ষণ আগেই অবশ্য ইমরান প্রধানমন্ত্রী ভবন ছেড়ে চলে যান।
ইমরান খান ১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালে গঠন করেন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এরপর ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসেন।  রাজনীতির মাঠে শুরুতে ইমরান খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ২০০২ সালের আগ পর্যন্ত তার দল সংসদে কোনো আসন পায়নি। ২০০২ সালের নির্বাচনে ইমরানই প্রথম ব্যক্তি যিনি পিটিআইয়ের প্রার্থী হিসেবে জয়ের দেখা পান। আবার ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন তার দল বর্জন করে। কিন্তু ২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে ইমরানের দল উঠেপড়ে লাগে। ওই নির্বাচনে অল্পের জন্য পিটিআই দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেনি। তবে ২০১৮ সালের জুলাইয়ের নির্বাচনে ছক্কা মারতে ভুল করেননি ইমরান। তার দল পিটিআই ২৭২টির মধ্যে ১১৭টি আসন পেয়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেয়। ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ইমরান। যদিও ঐতিহাসিক কারণ বিশ্লেষণ করে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই বলে আসছিলেন, এর সবই সামরিক উর্দিধারীদের ক্যারিশমা। পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রী তার পাঁচ বছরের পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। ইমরানের সঙ্গেও সেটিই ঘটলো।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..